লাইলাতুল অর্থ রাত। কদরের এক অর্থ সম্মান, মর্যাদা, সুমহান। আরেক অর্থ তাকদির বা ভাগ্য নির্ধারণ। লাইলাতুল কদর অর্থ সম্মানিত রজনী বা ভাগ্য নির্ধারণের রজনী। এই রাত হাজার মাসের চেয়ে মর্যাদাবান এবং এই রাতে পরবর্তী এক বছরের ভাগ্য নির্ধারিত করা হয় বলে এই রাতকে লাইলাতুল কদর বলা হয়। মহানবী সা: এ রাত অনুসন্ধান করতেন এবং উম্মতকেও অনুসন্ধান করতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে- ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতে শবেকদর তালাশ করো’ (বুখারি, মিশকাত-১৯৮৩)।
ইতেকাফ রমজানের শেষ দশকের বিশেষ আমল। ভোগবাদী দুনিয়ার মিথ্যে মায়া ত্যাগ করে, পরিবার-পরিজন, চাকরি-বাকরি, ব্যবসায়-বাণিজ্য ইত্যাদি বর্জন করে কেবল মনিবের সন্তুষ্টির জন্য একান্তে বসে ইবাদত-বন্দেগি করা উচ্চ মানসম্পন্ন মুমিনের পরিচয়। হজরত আয়েশা রা: বলেন, মহানবী সা: রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন, যে পর্যন্ত না আল্লাহ তাঁকে ওফাত দান করেন। তাঁর পরে তাঁর স্ত্রীরা এভাবে ইতেকাফ করতেন (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত-১৯৯৬)।
সাদাকাতুল ফিতর : সাদাকা অর্থ দান, জাকাত ইত্যাদি। আর ফিতর অর্থ ভঙ্গ করা, বিদীর্ণ করা, সৃষ্টি করা ইত্যাদি। উভয় শব্দের যৌথ অর্থ দানের মাধ্যমে ভঙ্গ করা। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন দান ও ঈদ উদযাপনের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করা হয়, তাই এই দান সাদাকাতুল ফিতর এবং এই দিনকে ঈদুল ফিতর বলা হয়। ধনী স্বাধীন মুসলমান ব্যক্তির ওপর সাদাকায়ে ফিতর ওয়াজিব। মহানবী সা: রমজানে অধিক পরিমাণে দান করতেন। আয়েশা রা: বলেন, রমজানে রাসূল সা:-এর দান সদকা করার ব্যাপারে উৎসাহ উদ্দীপনা অধিক বেড়ে যেত। তিনি রমজান মাসকে শাহরুল মুয়াসাত তথা সহানুভূতির মাস বলে ঘোষণা করেন। সাদাকায়ে ফিতর দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে ওয়াজিব হয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: সাদাকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন রোজাকে অনর্থক ও অশালীন বাক্যালাপ থেকে পবিত্র করার জন্য এবং নিঃস্বদের খাদ্য দানের জন্য (সুনানে আবু দাউদ)।
আপনার রব আপনাকে পরিত্যাগ করেননি এবং শত্রুতাও করেননি। আর অবশ্যই আপনার জন্য পরবর্তী সময় পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে শ্রেয়। আর অচিরেই আপনার রব আপনাকে অনুগ্রহ দান করবেন, ফলে আপনি সন্তুষ্ট হবেন। তিনি কি আপনাকে ইয়াতিম অবস্থায় পাননি? এরপর তিনি অশ্রয় দিয়েছেন; আর তিনি আপনাকে পেলেন পথ সম্পর্কে অনবহিত, এরপর তিনি পথের নির্দেশ দিলেন।
-(সূরা আদ-দুহা, আয়াত : ৩-৭)