17 w - Translate

একটি_ভুল_প্রচারের_নিরসনঃ-

গিরিশ চন্দ্র সেন বাংলা ভাষায় কোরআন শরীফের অনুবাদক নয়।
_______________
সর্বপ্রথম ১৮০৮ সালে বাংলা ভাষায় কুরআন শরীফের আংশিক অনুবাদ করেন মাওলানা আমীরুদ্দীন বসুনিয়া।

এরপর বাংলা ভাষায় কুরআন শরীফের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ করেন মৌলভী নাঈমুদ্দীন ১৮৩৬ সালে।

গিরিশ চন্দ্র সেন শুধু উক্ত অনুবাদকে পুস্তক আকারে সন্নিবেশ করেছেন, গিরিশ চন্দ্র হচ্ছেন প্রকাশক। তাও অনেক পরে, ১৮৮৬ সালে।

সুতরাং কুরআন শরীফের প্রথম বাংলা অনুবাদক গিরিশ চন্দ্র নন, বরং মৌলভী নাঈমুদ্দীনই পূর্ণাঙ্গ কুরআন শরীফের প্রথম বাংলা অনুবাদক।

আর মাওলানা আমীরুদ্দীন বসুনিয়া হলেন বাংলা ভাষায় প্রথম কুরআন মাজীদের আংশিক অনুবাদক।

গিরিশ চন্দ্র সেনের জন্ম ১৮৩৫ সালে এবং মৃত্যু ১৯১০ সালে। গিরিশ চন্দ্রের জন্মেরও আগে অর্থাৎ ১৮০৮ সালে কুরআন মাজীদের বাংলায় অনুবাদের কাজ শুরু করেন মাওলানা আমীর উদ্দীন বসুনিয়া।

এরপর গিরিশ চন্দ্র সেনের জন্মের একবছর পরই অর্থাৎ ১৮৩৬ সনে মৌলভী নাঈমুদ্দীন পূর্ণাঙ্গ কুরআন মাজীদের বাংলা অনুবাদ সম্পন্ন করেন।

আরবি জানেন না, আরবি ব্যাকরণ জানেন না-
এমন ব্যাক্তি কুরআন অনুবাদ করেছে এমন প্রচার মুর্খতা।

বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে যে, ভাই গিরীশ চন্দ্র সেন আল কুরআনের প্রথম বাংলা অনুবাদক। এ প্রচারণার কিছু কারণ ছিল। বৃটিশ আমলে এদেশে ব্রাহ্মধর্মের একটা জোয়ার এসেছিল।

গোঁড়া হিন্দু গিরীশ চন্দ্র সেন এক সময় হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। ব্রাহ্মধর্ম এ দেশে ছিল একটি নতুন ধর্মমত।

তাই এ ধর্মমত আপামর জনসাধারণের মধ্যে প্রচারের জন্য গিরীশ চন্দ্র নিজে উদ্যোগী হলেন।

কিন্তু অর্থকড়ির তো প্রয়োজন। সেটা আসবে কোথা থেকে! তিনি ফারসী ভাষায় পন্ডিত ছিলেন।

মুসলমানদের পকেট থেকে টাকা বের করার জন্য বেশকিছু ইসলামী বই রচনা করলেন এবং সেই সাথে পবিত্র আল কুরআনের প্রকাশ করলেন প্রকাশক হয়ে। মুসলমানরা এ বই কিনলোও প্রচুর। ফলে বাংলা ভাষাভাষী যারাই কুরআন মাজীদের বঙ্গানুবাদ হাতে পেতে চাইলো তাদের হাতে পৌঁছে গেল তার প্রকাশিত কুরআন মাজীদ।

এ ব্যাপারে তাঁকে ব্রাহ্মসমাজ হিন্দু ব্যক্তিবর্গ এমন কি বৃটিশরাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। ফলে মানুষ মনে করেছে পবিত্র কুরআন মাজীদের প্রথম বঙ্গানুবাদকারী হচ্ছেন গিরীশ চন্দ্র সেন।

আসলে পবিত্র কুরআনের প্রথম বঙ্গানুবাদকারী যে মৌলভী মোহাম্মদ নঈমউদ্দীন সে কথা অল্প কিছু লোক জানলেও ব্যাপকভাবে প্রচার করার সুযোগ আসেনি।

গিরীশ চন্দ্র কুরআনের অনুবাদ বিক্রি করে যে অর্থ লাভ করতেন তা ব্যয় করতেন ব্রাহ্মধর্ম প্রচার কাজে। ফলে ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের মিশনের সাথে কুরআন বিক্রয়ের একটা গভীর সম্পর্ক ছিল।

মৌলভী মোহাম্মদ নঈমউদ্দীন ছিলেন একজন মুসলমান। তিনি স্বত:প্রণোদিত হয়ে আল কুরআনের বঙ্গানুবাদ করেছিলেন। তা প্রচারের জন্য গিরীশ চন্দ্র সেনের মতো কোনো মিশন ছিল না। যার কারণে তার প্রচার প্রসার ছিল সীমিত।

এমনি করেই আল কুরআনের প্রথম বঙ্গানুবাদকারী হয়েও মৌলভী মোহাম্মদ নঈমউদ্দীন গিরীশ চন্দ্র সেনের মতো প্রচার পেতে পারেন নি॥

[ যত পরিমানে সম্ভব পোস্টটি শেয়ার করুন অনেকেই ভুলের মধ্যে ডুবে আছে তাদের কে জানার সুযোগ করে দিন]

তথ্যসুত্রঃ
ইন্টারনেট ও অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন মিডিয়া।

#দৈনিক_সংগ্রামঃ ২১ শে জুলাই,২০১৮.

#দৈনিক_ঢাকা পোস্টঃ ৭ই সেপ্টেম্বর,২০১৮.

#জিব্রাইলের_ডানাঃ ১লা মার্চ,২০০৯.

#বিডি_আল_কোরআনঃ ৪ঠা এপ্রিল,২০১৩.
#সাইবার_মোজাহিদঃ জানুয়ারি,২০১৮.

#মাসিক_মদিনাঃ আগস্ট,২০০৪.
প্রশ্নোত্তর পর্ব,পৃষ্ঠাঃ ৪৭.