জিলহজ্জ মাস নিয়ে বিস্তারিত.....🌿
.
১) জিলহজ্জ মাস কবে শুরু?
৭ জুন শুক্রবার যিলক্বদ মাসের ২৯ দিন শেষ হবে। ঐ দিন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখতে হবে।
২) রোযা রাখবো কবে?
যদি চাঁদ ৭ জুন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায় তাহলে ঐ দিন রাতেই সাহরি খেয়ে ৮ জুন শনিবার থেকে রোযা রাখা শুরু করতে হবে।
(সেই ভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন)
আর যদি ৭ তারিখ চাঁদ দেখা না যায় তাহলে ৮ তারিখ শনিবার রাতে সাহরি খেয়ে ০৯ তারিখ রবিবার থেকে রোযা রাখতে হবে।
৩) কতগুলো রাখবো?
রোযা মোট ৯ টা (১ থেকে ৯ যিলহজ্জ)। সবগুলো রাখাই উত্তম।
সব না পারলে সাধ্যমতো রাখবেন।
অন্তত কিছু না হলেও শেষের দুটো রোযা (৮, ৯ যিলহজ্জ) বা শেষ (৯ যিলহজ্জ) একটা রোযা রাখা উচিত।
এগুলো নফল রোযা।
কেউ না রাখলে গুনাহ হবে না।
কেউ আবার ভাববেন না যে রাখতেই হবে। আপনার ইচ্ছা, আপনি আপনার আখিরাত কেমন ভাবে গড়বেন।
৪) শুনেছি ঈদের আগের দিন রোযা রাখা হারাম?
ভুল শুনেছেন।
বছরের ৫ দিন রোযা রাখা হারাম।
শাওয়ালের ১ তারিখ (রোযার ঈদের দিন), যিলহজ্বের ১০, ১১, ১২, ১৩ তারিখ (কুরবানি ঈদের দিন ও পরের ৩ দিন)। মোট ৫দিন।
এছাড়া শুধু শুক্রবার একদিন এবং শুধু শনিবার একদিন সাধারণ নফল রোযা রাখা নিষেধ।
তবে এর সাথে আরো একটি করে রোযা রাখলে রাখা যায়।
৫) আমি তো কুরবানী দিবো না তাহলে?
এই রোযা গুলো নফল।
কুরবানীর সাথে সম্পর্ক না।
আপনি রাখলে সওয়াব পাবেন।
না রাখলে সমস্যা নাই।
৬ ) শুনেছি যারা কুরবানী করবে তারা নখ চুল ইত্যাদি কাটবে না?
জী। যারা কুরবানী করবে তাদের জন্য সুন্নাত হলো যিলহজ্ব শুরুর পর থেকে কুরবানী না করা পর্যন্ত চুল না কাটা,,
এজন্য যিলহজ্জ মাস শুরুর আগেই এই কাজ গুলো করে নিতে হবে।
যারা কুরবানী করবে না তারাও এই আমল গুলো করলে সওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ। নারী পুরুষ ছেলে মেয়ে সবাই করতে পারবে এই আমল।
এই আমল করতে চাইলে ৭ জুন সন্ধ্যার আগেই সব কিছু পরিষ্কার করে নিতে হবে। আপনি সেই ভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।
৭) রোযা রাখতে গিয়ে যদি সাহরি খেতে না পারি?
সাহরি খাওয়া সুন্নাত।
ইচ্ছা করে ত্যাগ করা যাবে না।
যদি ঘুমের কারনে টের না পাওয়া যায় তাহলে কিছু না খেয়ে শুধু নিয়ত করে রাখলেই রোযা হবে।
নফল রোযা রাখছি বললেই হবে। অন্যদিকে রোযা রাখার জন্য সাহরি করলেই নিয়ত হয়ে যাবে (ইনশাআল্লাহ) মুখে না বল্লেও চলবে।
৮ ) আরাফার দু'আ ও তাকবীরে তাশরীক কি?
আরাফার দুআ আরাফার দিনে পড়তে হয়। তবে সেটা অন্যান্য যেকোন সময়ও পড়া যাবে।
দু'আটি হলো -
لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
(লা ইলাহা ইল্লাল্লহু
ওয়াহ্'দাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুল্ কু ওয়া লাহুল হা'মদু ওয়া হুওয়া আ'লা কুল্লি শাই ইং কদির)
এছাড়া নীচের তাসবীহটি বেশী বেশী পড়বেন।
سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ وَسُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ
(সুবহা'নাল্লহি ওয়াবিহা'মদিহি ওয়া সুবহা'নাল্লহিল আ'যীম)
আর তাকবীরে তাশরীক প্রত্যেক বালেগ পুরুষ ও নারীর উপর ফরয নামায শেষ করে একবার উচ্চস্বরে পড়া ওয়াজিব। নারীরা নিজে শুনতে পারবে এমনভাবে পড়বে। বেশি উচু স্বরে পড়বে না।
তাকবীর হল -
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أكْبَرُ، اَللهُ أكْبَرُ،
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ ﻭ ﻟِﻠّﻪ الحَمْدُ
(আল্লহু আকবার আল্লহু আকবার আল্লহু আকবার। লা-ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াল্লহু আকবার। আল্লহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হা'মদ)
▪️কবে কখন পড়বেন?
০৯ যিলহজ্জ = ফজর যোহর আছর মাগরিব ইশা
১০ যিলহজ্জ = ফজর যোহর আছর মাগরিব ইশা
১১ যিলহজ্জ = ফজর যোহর আছর মাগরিব ইশা
১২ যিলহজ্জ = ফজর যোহর আছর মাগরিব ইশা
১৩ যিলহজ্জ = ফজর যোহর আছর।
সকল ওয়াক্তে ফরয নামাযের সালাম ফিরানোর পরপর একবার পুরুষেরা উচ্চ স্বরে পড়বেন আর নারীরা নিজে শোনার মত পড়বেন।
সুন্নাত, নফল, ওয়াজিব নামাযে পড়া লাগবে না।
১০) মহিলাদের কি কুরবানী করতে হয়?
জী। কুরবানীর শর্ত পূরণ হলেই করতে হবে।
যদি সোনা রূপা ও নগদ অর্থ আলাদা ভাবে বা এক সাথে ৪৩০০০ টাকা বা এর বেশি হয় তাহলে কুরবানী করতে হবে।
এটা আনুমানিক হিসাব বললাম।
বাজার থেকে ৫২.৫ ভরি রূপার বিক্রয় দাম জেনে নিবেন।
৯) ঈদ কবে হবে?
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ ঈদ হয়।
চাঁদ দেখার পর হিসাব করলেই পাবেন।
১৭ জুন বা ১৮ জুন যেকোন একদিন হবে।
১০) এখন কি যাকাত দেওয়া যাবে?
জী যাবে। যাকাত যেকোন সময় দেওয়া যায়।
যার যাকাত যখন ফরয হয় তখন দিয়ে দেওয়াই উত্তম।
১১) আরাফার রোযা কবে?
আরাফার রোযা ঈদের আগের দিন।
বাংলাদেশে ঈদ সৌদির একদিন পরে হয়।
তাই আলেমগণ বলেন ঈদের আগের দুই দিন রোযা রাখতে।
১২) যারা অন্য দেশে থাকে তারা কবে রোযা রাখবে?
যার যার দেশের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে রাখবে।
এজন্য চাঁদ কবে উঠছে খেয়াল রাখতে হবে।
সাহরি ও ইফতারের সময়সূচী অনলাইন বা গুগল থেকে জেনে নিবেন।
.
সংগৃহীত ও সামান্য পরিমার্জিত
🖋জান্নাতুননেসা সুমাইয়া
@everyone